Latest News

লন্ডনের রাস্তায় সুবহানাল্লাহ লেখা বাস



রমজান মাসে সিরিয়া যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য তহবিল সংগ্রহে দেশজুড়ে প্রচারণা শুরু করেছে একটি ব্রিটিশ মুসলিম দাতব্য সংস্থা। ওই প্রচারণার অংশ হিসেবেই তারা সেখানকার যাত্রীবাহী বড় বড় বাসগুলোতে সুবহানাল্লাহসহ (সকল পবিত্রতা আল্লাহর) গুণবাচক বিভিন্ন আরবি শব্দ লেখা স্টিকার সেঁটে দেবে বলে দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাটি জানিয়েছে। উদ্যোক্তাদের আশা, অভিনব এই প্রচারণার মাধ্যমে তারা মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছ থেকে মোটা অংকের তহবিল সংগ্রহ করতে পারবেন।

দেশটিতে রমজান শুরু হচ্ছে ৭ জুন। এই মাসেই মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা তাদের আয়ের আড়াই ভাগ জাকাত হিসেবে গরীব দুঃখীদের জন্য দান করে থাকেন। ইসলাম ধর্মের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম হচ্ছে জাকাত।মুসলিম ওই দাতব্য সংস্থার ধারণা, তাদের এই উদ্যোগ সিরিয়া যুদ্ধের কারণে ভয়াবহভাবে মানবিক বিপর্যয়ের শিকার লাখ লাখ মানুষ ইতিবাচক প্রচারণার সুফল পাবে।

শুধু তাই নয়, এটি ব্রিটেনের মুসলিম সম্প্রদায়ের যুবকদের চরমপন্থিদের সঙ্গে যোগ দেয়া থেকেও বিরত রাখবে।যুক্তরাজ্যে এই তহবিল সংগ্রাহক কর্মকাণ্ডের পরিচালক ইমরান মাদ্দেন বলেছেন, ‘এক অর্থে আপনি একে পরিস্থিতি পরিবর্তনের প্রচারণা হিসেবেও উল্লেখ করতে পারেন। কারণ আমরা চাইছি এই দেশে মুসলিম সম্প্রদায় সম্পর্কে যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে তা বদলাতে।’রমজানজুড়ে তারা ১০ কোটি পাউন্ড (১৪ কোটি ৪২ লাখ ৪৪ হাজার ৫০০শ মার্কিন ডলার) সংগ্রহ করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন।

আগামী ২৩ মে থেকে সুবহানাল্লাহ লেখা ৬৪০টি বাস যুক্তরাজ্য জুড়ে ঘুরে বেড়াবে। সম্প্রতি পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সাদিক খান লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের উৎসাহ উদ্দীপনায় জোয়ার এসেছে। ধারণা করা হয়ে থাকে, লন্ডনের মোট জনসখ্যার শতকরা ৫০ ভাগই মুসলিম। তবে ওই শহরে সাধারণতঃ কোনো যানবাহনে এ ধরনের প্রচারণা চোখে পড়ে না। কেননা সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য যানবাহন বা স্থাপনায় এ ধরনের পোস্টার বা স্টিকার লাগানো আইনত নিষিদ্ধ।তবে ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর কথা ভিন্ন।

ধর্ম প্রচারের জন্য তারা এ জাতীয় প্রচারণা চালাতেই পারেন, যতক্ষণ না সেটা ‘গুরুতর অপরাধ’ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এখানে প্রসঙ্গক্রমে খ্রিস্টানদের একটি ‘শুদ্ধি’ প্রচারণার কথা উল্লেখ করা যায়। ২০১২ সালে সমকামীদের ‘প্রভাবিত’ করার অভিযোগ ওঠার পর খ্রিস্টানদের ওই দাতব্য প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এর আগে ২০০৯ সালে ব্রিটিশ হিউমেনিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের একটি নাস্তিক্যবাদী প্রচারণাও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

তারা তখন দেশ জুড়ে ‘কোনো ঈশ্বর নেই, তাই সকল দুশ্চিন্তা বাদ দিয়ে আনন্দের সঙ্গে বাঁচুন’ প্রচারণা শুরু করেছিল। কিন্তু ধর্মভীরু খ্রিস্টানদের কাছ থেকে অভিযোগ আসার পরই ওই সংস্থার প্রচারণায় বাধ সাধে প্রশাসন। এর জবাবে মাত্র এক মাস পরেই ‘ঈশ্বর আছে’ প্রচারণা শুরু করেছিল খ্রিস্টান ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলো।তবে ব্রিটিশ মুসলিমদের এই তহবিল সংগ্রহ প্রচারণায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। তাই রমজান মাসজুড়ে লন্ডনসহ বড় বড় শহর দাপিয়ে বেড়াবে ‘সুবনাল্লাহ ’ লেখা বাসগুলো।

No comments:

Post a Comment

0


রমজান মাসে সিরিয়া যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য তহবিল সংগ্রহে দেশজুড়ে প্রচারণা শুরু করেছে একটি ব্রিটিশ মুসলিম দাতব্য সংস্থা। ওই প্রচারণার অংশ হিসেবেই তারা সেখানকার যাত্রীবাহী বড় বড় বাসগুলোতে সুবহানাল্লাহসহ (সকল পবিত্রতা আল্লাহর) গুণবাচক বিভিন্ন আরবি শব্দ লেখা স্টিকার সেঁটে দেবে বলে দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাটি জানিয়েছে। উদ্যোক্তাদের আশা, অভিনব এই প্রচারণার মাধ্যমে তারা মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছ থেকে মোটা অংকের তহবিল সংগ্রহ করতে পারবেন।

দেশটিতে রমজান শুরু হচ্ছে ৭ জুন। এই মাসেই মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা তাদের আয়ের আড়াই ভাগ জাকাত হিসেবে গরীব দুঃখীদের জন্য দান করে থাকেন। ইসলাম ধর্মের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম হচ্ছে জাকাত।মুসলিম ওই দাতব্য সংস্থার ধারণা, তাদের এই উদ্যোগ সিরিয়া যুদ্ধের কারণে ভয়াবহভাবে মানবিক বিপর্যয়ের শিকার লাখ লাখ মানুষ ইতিবাচক প্রচারণার সুফল পাবে।

শুধু তাই নয়, এটি ব্রিটেনের মুসলিম সম্প্রদায়ের যুবকদের চরমপন্থিদের সঙ্গে যোগ দেয়া থেকেও বিরত রাখবে।যুক্তরাজ্যে এই তহবিল সংগ্রাহক কর্মকাণ্ডের পরিচালক ইমরান মাদ্দেন বলেছেন, ‘এক অর্থে আপনি একে পরিস্থিতি পরিবর্তনের প্রচারণা হিসেবেও উল্লেখ করতে পারেন। কারণ আমরা চাইছি এই দেশে মুসলিম সম্প্রদায় সম্পর্কে যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে তা বদলাতে।’রমজানজুড়ে তারা ১০ কোটি পাউন্ড (১৪ কোটি ৪২ লাখ ৪৪ হাজার ৫০০শ মার্কিন ডলার) সংগ্রহ করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন।

আগামী ২৩ মে থেকে সুবহানাল্লাহ লেখা ৬৪০টি বাস যুক্তরাজ্য জুড়ে ঘুরে বেড়াবে। সম্প্রতি পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সাদিক খান লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের উৎসাহ উদ্দীপনায় জোয়ার এসেছে। ধারণা করা হয়ে থাকে, লন্ডনের মোট জনসখ্যার শতকরা ৫০ ভাগই মুসলিম। তবে ওই শহরে সাধারণতঃ কোনো যানবাহনে এ ধরনের প্রচারণা চোখে পড়ে না। কেননা সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য যানবাহন বা স্থাপনায় এ ধরনের পোস্টার বা স্টিকার লাগানো আইনত নিষিদ্ধ।তবে ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর কথা ভিন্ন।

ধর্ম প্রচারের জন্য তারা এ জাতীয় প্রচারণা চালাতেই পারেন, যতক্ষণ না সেটা ‘গুরুতর অপরাধ’ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এখানে প্রসঙ্গক্রমে খ্রিস্টানদের একটি ‘শুদ্ধি’ প্রচারণার কথা উল্লেখ করা যায়। ২০১২ সালে সমকামীদের ‘প্রভাবিত’ করার অভিযোগ ওঠার পর খ্রিস্টানদের ওই দাতব্য প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এর আগে ২০০৯ সালে ব্রিটিশ হিউমেনিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের একটি নাস্তিক্যবাদী প্রচারণাও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

তারা তখন দেশ জুড়ে ‘কোনো ঈশ্বর নেই, তাই সকল দুশ্চিন্তা বাদ দিয়ে আনন্দের সঙ্গে বাঁচুন’ প্রচারণা শুরু করেছিল। কিন্তু ধর্মভীরু খ্রিস্টানদের কাছ থেকে অভিযোগ আসার পরই ওই সংস্থার প্রচারণায় বাধ সাধে প্রশাসন। এর জবাবে মাত্র এক মাস পরেই ‘ঈশ্বর আছে’ প্রচারণা শুরু করেছিল খ্রিস্টান ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলো।তবে ব্রিটিশ মুসলিমদের এই তহবিল সংগ্রহ প্রচারণায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। তাই রমজান মাসজুড়ে লন্ডনসহ বড় বড় শহর দাপিয়ে বেড়াবে ‘সুবনাল্লাহ ’ লেখা বাসগুলো।

Post a Comment

Dear readers, after reading the Content please ask for advice and to provide constructive feedback Please Write Relevant Comment with Polite Language.Your comments inspired me to continue blogging. Your opinion much more valuable to me. Thank you.